How To Start Affiliate Marketing
|

এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবো?

এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবো বিষয়টি সম্পর্কে জেনে সহজেই এফিলিয়েট মার্কেটিং ক্যারিয়ার গঠন করতে পারেন। বর্তমান সময়ে অর্থ উপার্জনের নতুন নতুন পথ উন্মোচিত হচ্ছে। আর ইন্টারনেট তার মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। অনলাইনে বসেই আজকাল যে কেউ অর্থ উপার্জন করতে পারে, আর এমনই এক জনপ্রিয় মাধ্যম হল, এফিলিয়েট মার্কেটিং।

তাই আজকের এই আর্টিকেলে আমরা এফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে বিভিন্ন বিষয় আলোচনা করবো। যেমন, এফিলিয়েট মার্কেটিং কি? এফিলিয়েট মার্কেটিং কীভাবে কাজ করে? এবং এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবো?

তো আপনি যদি উক্ত বিষয় গুলো সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন, তাহলে হাতে একটু সময় নিয়ে আজকের পুরো লেখাটি মন দিয়ে পড়ুন। 

এফিলিয়েট মার্কেটিং কি?

এফিলিয়েট মার্কেটিং হলো এমন একটি ব্যবসায়িক কৌশল যেখানে আপনি কোনো কোম্পানির পণ্য বা সেবা প্রচার করে তা বিক্রি করে কমিশন নিতে পারবেন। আর পুরো এফিলিয়েট মার্কেটিং সেক্টরটি এই প্রক্রিয়ায় কাজ করে থাকে। 

এফিলিয়েট মার্কেটিং বিষয়টি ভালোভাবে বুঝতে একটি উদাহরণ তুলে ধরা যাক- ধরুন আপনার একটি জনপ্রিয় ফ্যাশন ব্লগ আছে। আপনি সেই ব্লগে বিভিন্ন পোশাকের রিভিউ পাবলিশ করেন। এবার আপনি যদি কোনো নির্দিষ্ট পোশাক বিক্রেতার সাথে অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামে যুক্ত হন এবং আপনার ব্লগে তাদের পোশাকের লিঙ্ক শেয়ার করেন, তাহলে যখন কেউ আপনার লিঙ্ক ব্যবহার করে সেই পোশাক কিনবে, তখন আপনি প্রতিটি বিক্রয়ের জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ কমিশন পাবেন।

কেন এফিলিয়েট মার্কেটিং জনপ্রিয়?

Why Affiliate Marketing Is Popular

এফিলিয়েট মার্কেটিং আপনাকে নিজের বস হওয়ার সুযোগ করে দিবে। যেখানে আপনি নিজের সুবিধা অনুযায়ী সময়সূচী নির্ধারণ করতে পারবেন এবং যে কোনো জায়গা থেকে কাজ করতে পারবেন। এর পাশাপাশি আপনি আপনার পছন্দমতো যে কোনো পণ্য বা সেবা প্রচার করতে পারবেন। 

আর আমরা জানি, কোনো ব্যবসা শুরু করার জন্য বিনিয়োগ এর প্রয়োজন হয়। কিন্তুু এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করতে খুব বেশি বিনিয়োগ এর দরকার হয়না। 

কারণ, এফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য আপনাকে কোনো পণ্য তৈরি করতে হবে না, স্টক ম্যানেজ করতে হবে না, অথবা ডেলিভারির ঝামেলায় পড়তে হবে না। কারণ, একবার আপনি একজন সফল এফিলিয়েট মার্কেটার হতে পারলে, আপনি নিয়মিত আয় করতে পারবেন, এমনকি যখন আপনি কাজ করবেন না তখনও আপনার আয় বন্ধ হবেনা।

কিভাবে এফিলিয়েট মার্কেটিং কাজ করে?

How Affiliate Marketing Works

ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুলো এফিলিয়েট মার্কেটারদের জন্য এফিলিয়েট প্রোগ্রাম তৈরি করে। এই প্রোগ্রামে সাইন আপ করার পর, এফিলিয়েট মার্কেটাররা এক বা একাধিক লিঙ্ক পায়। এরপর তারা তাদের ওয়েব সাইট, ব্লগ, সোশ্যাল মিডিয়া ইত্যাদিতে এই লিঙ্ক শেয়ার করে। আর যখন কোনো গ্রাহক এই লিঙ্ক ক্লিক করে পণ্য ক্রয় করে, তখন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান গুলো এফিলিয়েট মার্কেটারকে একটি কমিশন প্রদান করে।

তবে এফিলিয়েট মার্কেটিং হলো এমন একটি ব্যবসায়িক কৌশল যেখানে তিনটি পক্ষ একসাথে কাজ করে। যেমন,

  • ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান: যারা পণ্য বা সেবা বিক্রি করে।
  • এফিলিয়েট মার্কেটার: যারা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পণ্য বা সেবা প্রচার করে।
  • গ্রাহক: যারা ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের পণ্য বা সেবা ক্রয় করে।

বর্তমান সময়ে যারা এফিলিয়েট মার্কেটিং এর সাথে যুক্ত আছে, তারা উপরের এই তিনটি প্রক্রিয়াতে কাজ করে। আর আপনিও যদি একজন দক্ষ এফিলিয়েট মার্কেটার হয়ে থাকেন, তাহলে আপনাকেও এই একই পদ্ধতি অনুসরন করে কাজ করতে হবে। 

এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবো?

Start affiliate marketing

প্রতিটা মানুষের জন্য অতিরিক্ত আয়ের সুযোগ খুঁজে বের করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। বর্তমান সময়ে ইন্টারনেট সেই অসীম সম্ভাবনার দরজা খুলে দিয়েছে আমাদের সামনে, যেখানে এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মতো ধারণা গুলো আমাদের আয়ের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে। তাহলে চলুন, এফিলিয়েট মার্কেটিং এর জগতে আপনার যাত্রা শুরু করার পূর্বে এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবো এ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই –

১। আগ্রহের বিষয় সিলেকশন (নিশ)

এফিলিয়েট মার্কেটিং-এ সফল হতে হলে, আপনার অবশ্যই এমন একটি বিষয় নির্বাচন করতে হবে যার প্রতি আপনার আন্তরিক আগ্রহ রয়েছে। প্রযুক্তি, ফ্যাশন, ভ্রমণ, খাদ্য – এমন অনেক নিশ রয়েছে যে গুলোর উপর আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারবেন।  

তবে সবচেয়ে ভালো হবে, আপনার জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এমন একটি নিশ নির্বাচন করা। কারণ যখন আপনার কোন বিষয় সম্পর্কে আগ্রহ থাকবে, তখন আপনি সে বিষয়ে কোয়ালিটি কন্টেন্ট তৈরি করতে পারবেন। আর তখন আপনার জন্য এফিলিয়েট মার্কেটিং করাও অনেক সহজ হবে। এফিলিয়েট নিশ সিলেকশনে যেসব জানা দরকার-

  • প্রথমত, এমন একটি নিশ খুঁজুন যার প্রতি আপনার আগ্রহ আছে। 
  • নির্বাচিত নিশে এফিলিয়েট লাভজনক হবে কিনা, তা যাচাই করবেন। 
  • আপনার টার্গেট অডিয়্যান্স কারা, সেটি রিসার্চ করবেন। 
  • উক্ত নিশে কেমন প্রতিযোগীতা আছে, তা জানা অত্যন্ত জরুরী। 
  • ট্রেন্ডিং বিষয় গুলোর দিকে নজর দিবেন।
  • নির্বাচিত নিশের প্রোডাক্ট মানুষ কিনবে কিনা তা যাচাই করবেন। 

দেখুন, ব্লগিং হোক কিংবা এফিলিয়েট মার্কেটিং, সব ক্ষেত্রে নিশ সিলেকশন করার কাজটি অনেক গুরুত্ব দিয়ে করতে হয়। কারণ, আপনি যদি নিশ সিলেকশনে ভুল করেন, তাহলে আপনি এই সেক্টরে ব্যার্থতা ছাড়া আর কিছুই পাবেন না। আর আপনার সুবিধার জন্য আমি পূর্বের আর্টিকেলে নিশ নিয়ে বিষদভাবে আলোচনা করেছি। আপনি অবশ্যই সেই আর্টিকেলটি পড়বেন।

২। বিশ্বস্ত এফিলিয়েট প্ল্যাটফর্ম নির্বাচন

যখন আপনি নিশ সিলেকশন করবেন তারপর আপনাকে দ্বিতীয় ধাপের কাজ করতে হবে। তো দ্বিতীয় ধাপে আপনাকে আপনার নির্বাচিত নিশের সাথে মানানসই এমন বিশ্বস্ত এফিলিয়েট প্রোগ্রাম খুঁজে বের করতে হবে। আর বর্তমান সময়ে এমন অনেক এফিলিয়েট প্রোগ্রাম আছে, তার মধ্যে অন্যতম হলোঃ Amazon Associates, ClickBank এবং ShareASale ইত্যাদি।  

তবে যখন আপনি কোনো এফিলিয়েট প্ল্যাটফর্ম নির্বাচন করবেন তখন আপনাকে আরো কিছু বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। যেমন, প্রতিটা প্রোডাক্ট সেলের বিনিময়ে কত পারসেন্ট কমিশন দিবে, তারা সততার সাথে পেমেন্ট করে কিনা, তাদের সাথে এফিলিয়েট করে নিজের ক্যারিয়ার গড়া যাবে কিনা ইত্যাদি। 

৩। ওয়েবসাইট তৈরি ও ব্লগ পোস্ট করা। 

উপরের ধাপ গুলো অনুসরণ করার পর আপনাকে আপনার নিশের সাথে সম্পর্কিত একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে। যেখানে আপনি নিয়মিত কোয়ালিটি কন্টেন্ট প্রকাশ করবেন। আর এই ওয়েবসাইট তৈরি করার সময় আপনাকে টার্গেট করা অডিয়্যান্সের পছন্দের দিক বিবেচনা করতে হবে। যেন তারা আপনার ওয়েবসাইট থেকে প্রোডাক্ট কেনার প্রতি আকৃষ্ট হয়। সেজন্য আপনার ওয়েবসাইট ডিজাইন আকর্ষণীয় করবেন এবং অবশ্যই সেই ওয়েবসাইট মোবাইল ফ্রেন্ডলি করবেন।

৪। এফিলিয়েট লিঙ্ক সেটআপ 

আপনার ওয়েবসাইটের প্রাসঙ্গিক সেকশন গুলোতে আপনাকে এফিলিয়েট লিঙ্ক সাবধানে বসিয়ে দিতে হবে। তবে এই লিংক সেটআপ করার কাজে যথেষ্ট স্বচ্ছতা বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। যেন আপনার ভিজিটররা সহজেই বুঝতে পারে যে আপনি এফিলিয়েট লিঙ্ক ব্যবহার করছেন এবং ক্লিক করে কেনা কাটা করলে আপনি কমিশন পাবেন। 

কিন্তুু ভুল করেও ভিজিটরদের চাপ, লোভনীয় অফার প্রদান করে লিংকে ক্লিক করতে বাধ্য করবেন না। যদি আপনি এমনটা করেন, তাহলে আপনি ভিজিটরের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা হারাবেন। এর ফলে আপনার সাইটে রিটার্নিং ভিজিটর ব্যাপকভাবে কমতে শুরু করবে।

৫। ডিজিটাল মার্কেটিং 

আপনি যখন কোনো প্রতিষ্ঠানের এফিলিয়েট প্রোগ্রামের সাথে যুক্ত হবেন তখন আপনাকে আপনার কন্টেন্ট মার্কেটিং করতে হবে। কারণ, মার্কেটিং করার মাধ্যমে আপনি যতো বেশি অডিয়্যান্সকে টার্গেট করতে পারবেন, আপনার সেল ততো বেশি বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। আর এই মার্কেটিং এর কাজটি আপনি মোট দুইটি উপায়ে করতে পারবেন। যেমন, 

  • ফ্রি মার্কেটিং
  • পেইড মার্কেটিং

তো যদি আপনি কোনো প্রকার অর্থ ব্যয় না করে এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে চান তাহলে আপনাকে এসইও করতে হবে। কারণ আমরা সবাই জানি যে, এসইও করার মাধ্যমে বিনামূল্যে টার্গেট করা অডিয়েন্সের নিকট পৌঁছানো সম্ভব। 

কিন্তু আপনি যদি পেইড মার্কেটিং করেন, তাহলে আপনাকে অর্থ ব্যয় করে এই মার্কেটিং প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। তবে আপনি যেকোনো ধরনের মার্কেটিং করুন না কেন, যদি আপনি সঠিকভাবে সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে না পারেন তাহলে আপনার সময় ও শ্রম সব বৃথা যাবে।

বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর সমূহ

“এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবো?” এই বিষয়ে আপনার মনে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে? তবে চলুন জেনে নেই সেই সকল প্রশ্ন ও উত্তর।

মোবাইল দিয়ে কি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সম্ভব?

বর্তমান সময়ে স্মার্টফোন আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কেনাকাটা, বিনোদন, যোগাযোগ – সবকিছুই এখন আমাদের হাতের মুঠোয়। এই স্মার্টফোন ব্যবহার করেই কি অর্থ উপার্জন করা সম্ভব? অবশ্যই সম্ভব! কারণ, এখন মোবাইল দিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনিও ঘরে বসেই আয় করতে পারবেন।

এফিলিয়েট মার্কেটিং এ কত পার্সেন্ট কমিশন দেওয়া হয়?

মূলত অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং (Affiliate marketing) এর কমিশন নির্ভর করে প্রোডাক্টের মূল্যের উপর। এই কমিশন সাধারনত ৫% থেকে ৭০% পর্যন্ত প্রদান করা হয়। তবে ভিন্ন ভিন্ন এফিলিয়েট প্ল্যাটফর্ম ভেদে এই কমিশন কিছুটা কম বেশি হতে পারে।

উপসংহার

উপরোক্ত আলোচনা থেকে আমরা এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবো এ সম্পর্কে জানলাম। তবে মনে রাখবেন, এফিলিয়েট মার্কেটিং সকলের জন্য উপযুক্ত নয়। কারণ, ধৈর্য্য, পরিশ্রম এবং অনলাইনে নিয়মিত উপস্থিতি এফিলিয়েট মার্কেটিং সাফল্যের মূল চাবিকাঠি। তো যদি আপনার এই গুণাবলী গুলো থাকে, তাহলে আপনার জন্য এফিলিয়েট মার্কেটিং হবে অর্থ উপার্জনের অন্যতম একটি পদ্ধতি। এছাড়াও আপনার জ্ঞানকে প্রসারিত করতে ব্লগ কি? ব্লগ থেকে কি ধরনের আয় হয়? সম্পর্কিত আর্টিকেলটি পড়ুন।

“এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবো?” সম্পর্কিত কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে অবশ্যই নিচে কমেন্ট করবেন। আর এমন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গুলো বিনামূল্যে জানতে আমাদের সাথে থাকবেন। ধন্যবাদ, ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

Similar Posts

4 Comments

  1. খুবই তথ্যবহুল পোস্ট! এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করার প্রাথমিক ধাপগুলো নিয়ে পরিষ্কার ধারণা পেলাম। ধন্যবাদ।

  2. অসাধারণ লেখা! এফিলিয়েট মার্কেটিং নিয়ে অনেক কিছু শিখলাম। নতুনদের জন্য খুবই উপকারী।

  3. ধন্যবাদ, অসাধারণ কিছু আলোচনা যা ডিজিটাল মার্কেটিং করতে অনেক সহযোগীতা করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *